কাটা খুরা গাছের উপকারিতা

কুলেখাড়ার রস ও বীজের উপকারিতা 

কাটা খুরা গাছের নানা রকমের উপকারিতা রয়েছে। আজকে আমরা কাটা খুরা গাছের উপকারিতা ও সকল পুষ্টিগুণ সম্পর্কে আলোচনা করবো।

কাটা খুরা গাছটি গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত কাটা থাকে। একদিকে যেমন তরকারি হিসেবে রান্না করে কাটা খুরা শাক খেতে খুবই সুস্বাদু তেমনি আরেকদিকে চিকিৎসা ক্ষেত্রে কাটা খুরা মহা ঔষধ হিসেবে পরিচিত।

পোস্ট সূচিপত্রঃ

কাটা খুরা গাছের উপকারিতা

সাধারণত শাক সব্জির ভিটাতে বা পিঁয়াজ-রসুনের ক্ষেতে কাটা খুড়া গাছ দেখা যায়। বিশেষ করে গ্রাম গঞ্জের আনাচে কানাচে পরিত্যক্ত জায়গায় এই গাছ জন্মায়। কাটা খুরা গাছ পুষ্টীগুণে ভরপুর। এই শাকে রয়েছে ভিটামিন এ, বি ও সি। শরীরের রক্ত বৃদ্ধি করে, আমাদের মেজাজ ঠাণ্ডা রাখে, শরীরের দূষিত রক্ত পরিশোধন করে রক্ত পরিষ্কার রাখে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।


এক কথায় অনন্য পুষ্টিগুণে ভরপুর কাটা খুরা। কাটা খুরা শাক হিসেবে দারুণ খেতে। কাটা খুরা গাছ বিভিন্ন ঘরোয়া চিকিৎসা পদ্ধতিতে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার হয়ে আসছে। নিচে কাটা খুরা গাছের সকল গুণাগুণ তুলে ধরা হলো।

কাটা খুরা গাছের শিকরের উপকারিতা

প্রাচীনকাল থেকে ঔষধ হিসেবে কাটা খুরা গাছের ব্যবহার দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে যৌবন শক্তি বৃদ্ধি করতে এই গাছটির শিকর বহুল ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। আপনি যদি বিশেষ মূহুর্তে দূর্বল অনুভব করেন তাহলে এই গাছটির শিকর হতে পারে আপনার জন্য আশীর্বাদস্বরুপ।

কেননা এই গাছের শিকরে এমন কিছু পুষ্টিগুণ আছে যা আপনার পুরনো যৌবন ফিরে পেতে সাহায্য করবে। হারানো যৌবন শক্তি ফিরে পেতে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে কাটা খুরা গাছের শিকর বেটে রস বের করে ১ গ্লাস পানির সাথে মিশিয়ে ৩০ দিন খেতে পারেন। তাহলে আশা করছি আপনি আপনার কাঙ্ক্ষিত ফলাফল পেয়ে যাবেন।

কোষ্টকাঠিন্য রোগে কাটা খুড়ার উপকারিতা

কোষ্টকাঠিন্য রোগে কাটা খুরা খুব উপকারী ভেষজ ঔষধ। প্রতিদিন কাটা খুরা গাছের পাতা ও শিকরের রস পানির সাথে মিশিয়ে সকালে খালি পেটে খেলে কোষ্টকাঠিন্য থেকে মুক্তি মেলে। এই গাছের রস দেহের ভিতরে গিয়ে হজম শক্তি বৃদ্ধি করে।
 
ফলে সহজেই যে কোন খাবার হজম হয়ে যায়।আর আপনার খাবার মেনুতে কাটা শাক রাখুন তাহলে এতে করে আপনার কোষ্টকাঠিন্য ভালো হওয়ার পাশাপাশি রক্ত ও পরিষ্কার থাকবে।

শারীরিক দূর্বলতায় কাটা খুরার ব্যবহার

শারীরিকভাবে দূর্বলতা অনুভব করলে কাটা খুরা শাক বেশি বেশি খাওয়ার চেষ্টা করুন। বেশি বেশি এই শাক খাওয়ার ফলে সকল প্রকার শারীরিক দূর্বলতার অবসান ঘটে। শরীর ও মন মেজাজ ফুরফুরে হয়।শরীর নতুন করে শক্তি ফিরে পায় ও শরীরে শক্তি সঞ্চয় হয়।

মায়ের দুধ বৃদ্ধি

বাচ্চা হওয়ার পর অনেক মায়ের বুকের দুধ পর্যাপ্ত পরিমাণে বাচ্চা পায় না। এক্ষেত্রে ঐ বাচ্চাটির দুধের চাহিদা অপূর্ণ থেক যায় যার ফলে বাচ্চাটি পুষ্টিহীনতায় ভোগে। শারীরিকভাবে দূর্বল হয়ে পড়ে। প্রাকৃতিকভাবে মায়ের বুকের দুধ বৃদ্ধিতে কাটা খুরা শাক ভেজে এবং তরকারি রান্না করে খেতে পারেন।

মেয়েদের ঋতুস্রাবে কাটা খুরার ভূমিকা

ঋতুস্রাব মাসিক বা পিরিয়ড প্রতিটি মেয়ের জীবনেই খুব গুরুত্বপূর্ণ। অনেক সময় বিভিন্ন কারণে পিরিয়ড অনিয়মিত হয়ে যায়। যা একটি মেয়ের স্বাভাবিক জীবনে বাধা গ্রস্থ হয়ে দাঁড়ায়। আপনিও যদি এই সমস্যার সম্মুখীণ হন তাহলে কাটা খুরার শিকরের রসের সাথে পরিমাণমত গোল মরিচ গুঁড়ো করে ১সপ্তাহ খান।এতে করে আপনার শরীরের রক্ত পরিষ্কার হবে এবং সময় মতো পিরিয়ড হবে।

ক্ষত স্থানে রক্ত পড়া বন্ধ করতে কাটা খুরা পাতার ব্যবহার

অনেক সময় মাঠে কৃষি কাজ করার সময় আমাদের হাত পা অথবা শরীরের যে কোন জায়গা কেটে কেটে যায়। সেক্ষেত্রে তৎক্ষণাৎ রক্ত বন্ধ করার জন্য প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে কাটা খুরার পাতা বেটে ক্ষতস্থানে লাগিয়ে দিলে রক্ত পড়া বন্ধ হয়।

ফোড়া রোগে কাটা খুরার ব্যবহার

রক্ত দূষিত হওয়ার ফলে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ফোড়া উঠতে পারে। দীর্ঘদিন ধরে ফোড়া উঠে থাকার ফলে ঐ স্থানে প্রচুর ব্যাথা করে এবং কিনকিন করে অসহ্য লাগে। ফোড়ার উপরে ও চারপাশে কাটা খুরার পাতা বেটে প্রলেপ দিয়ে দিলে ব্যাথা কমে। এবং ফোড়ার ঐ স্থানের চামড়া নরম হয়ে সহজেই ফেটে গিয়ে পুঁজ বের হয়ে গিয়ে আরাম পাওয়া যায়।

আমার মতামত

আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি কাটা খুরা এমন একটা শাক যা প্রতিটা মানুষের জন্য খুবই উপকারী। সপ্তাহে ৩ দিন খাবার মেনুতে আপনি এই শাক রাখতে পারেন। এতে করে শারীরিকভাবে অনেক সুস্থ থাকবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url