আপাং গাছের উপকারিতা ও ১২টি ভেষজ গুণাবলি
আপাং গাছের উপকারিতা ও ভেষজ গুণাবলি নিয়ে আমাদের এই আর্টিকেলটি সাজানো হয়েছে।
আপনি যদি আপাং গাছের উপকারিতা ও এর ভেষজ গুণাবলি সম্পর্কে জানতে চান তাহলে এই
আর্টিকেলটি আপনার জন্য।
ভেষজ গুণে ভরপুর আপাং গাছ। আপাং গাছের পাতা পিষে বিষাক্ত কীট পতঙ্গ কামড়ানো
স্থানে প্রলেপ দিয়ে দিলে বিষ নষ্ট হয়। নিচে আপাং গাছের উপকারিতা ও ভেষজ গুণাগুণ
আলোচনা করা হলো।
পোস্ট সূচিপত্রঃ
- আপাং গাছের উপকারিতা
- ক্ষুধা মন্দা দূরীকরণে
- কাটা স্থানে রক্ত পড়া বন্ধে
- অর্শ্ব রোগে
- অতিরিক্ত সাদাস্রাব হলে
- বক্ষব্যাধিতে আপাং
- ঘন ঘন জ্বরে আপাং
- চুল পাকলে
- বিষাক্ত ক্ষতে
- খোস পচড়া ও চুলকানিতে
- ফোঁড়ার পুঁজ বের করতে
- প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া আপাং
- গ্রহণী রোগে
আপাং গাছের উপকারিতা
আপাং গাছের নানা ধরনের স্বাস্থ্য গুণ রয়েছে। আপাং গাছের উপকারিতা সম্পর্কে
জানার আগে চলুন গাছটি সম্পর্কে জেনে নিই। আপাং গাছ একটি একবর্ষজীবি বিরুৎ জাতীয়
উদ্ভিত। আপাং গাছ ২ধরনের হয়ে থাকে। সাদা ও লাল আপাং প্রায় সর্বত্রই আপাং গাছ
জন্মায়।
আরো পড়ুনঃ
কাটা খুরা গাছের উপকারিতা
আপাং গাছ স্থানভেদে ভিন্ন ভিন্ন নামে পরিচিত। যেমন সিসা গন্ধ,রক্ত আপাং,চিরচিরে
প্রভৃতি।আপাং গাছ সাধারণত ১-২ ফুট উঁচু হয়। বিভিন্ন রোগ নিরাময়ে আপাং গাছ ঔষুধ
হিসেবে কাজ করে।
ক্ষুধা মন্দা দূরীকরণে
আপাং আপনারা যারা ক্ষুধা মন্দাই দীর্ঘদিন ভুগতেছেন তারা আপাং গাছের শিকর এবং
গোল মরিচ পিষে নিয়ে ছোট ছোট বড়ি বানাবেন। বড়ি বানানো হয়ে গেলে বড়ি গুলো রোদে
শুকাবেন। শুকানো হয়ে গেলে প্রতিদিন বিকাল সকাল ২টা করে বড়ি খাবেন।এভাবে ১৫দিন
খান দেখবেন আপনার ক্ষুধা মন্দা আর নেই।
কাটা স্থানে রক্ত পড়া বন্ধে
শরীরের কোন অংশে কেটে গেলে আপাং গাছ থেতো করে কাটা স্থানে লাগিয়ে দিয়ে পরিষ্কার
কাপড় দিয়ে বেঁধে দিলে রক্ত পড়া বন্ধ হয়।
অর্শ্ব রোগে
অর্শ্ব বা পাইলস রোগে আপাং গাছ অনেক উপকারী ভেষজ। ৫গ্রাম আপাং এর বীজ আতপ চাল
ধোয়া পানি দিয়ে বেটে সকালে ঘুম থেকে উঠে ৭দিন খেলে অর্শের যন্ত্রণা ও রক্ত পড়া
বন্ধ হয়।
অতিরিক্ত সাদাস্রাব হলে
মেয়েদের সাদাস্রাব যদি বেশি হয় তাহলে ৪-৫গ্রাম আপাং গাছের শিকর বা মূল বেটে
সামান্য পরিমাণ পানির সাথে মিশিয়ে খেলে অতিরিক্ত সাদাস্রাবের মাত্রা কমে যাবে।
বক্ষব্যাধিতে আপাং
যাদের অল্পতেই বুক ধরপড় করে তাদের জন্য আপাং এর ভেষজ গুণ খুব কার্যকরী ভূমিকা
পালন করে। বুক ধরপড় থেকে মুক্তি পেতে প্রতি সপ্তাহে ২-৩দিন ১-২চামচ আপাং এর রস
পানির সাথে মিশিয়ে খান।দেখবেন আপনার হৃদযন্ত্র সবল হবে।
ঘন ঘন জ্বরে আপাং
ঘন ঘন যদি জ্বর আসে তাহলে আপাং গাছের মূল পিষে রস বের করে নিয়ে ২-৪ চা চামচ
খেলে ঘন ঘন আসা জ্বর ভালো হয়
চুল পাকলে
চুল পাকতে লাগলে আপাং এর শিকর বেটে মাথায় দিয়ে ৩-৪ঘণ্টা পর গোসল করলে চুল কালো
হয় এবং নতুন চুল গজানোর সম্ভাবনা বেড়ে যায় অনেকাংশে।
বিষাক্ত ক্ষতে
কোন কারণে ক্ষত স্থান যদি বিষাক্ত হয়ে যায় তাহলে সেক্ষেত্রে আপাং গাছের পাতা
কাণ্ড মূল সবই টাটকা টাটকা অবস্থায় বেটে রস বের করে নিয়ে পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্ষত
স্থানে দিয়ে পরিষ্কার কাপড় দিয়ে বেঁধে রেখে দিলে ক্ষত স্থান তাড়াতাড়ি সেরে উঠব।
খোস পচড়া ও চুলকানিতে
কয়েকটি আপাং গাছ ছোট ছোট টুকরো করে কেটে নিয়ে এবং সমপরিমাণ নিম ছাল পানিতে
জ্বাল দিয়ে নির্যাস বের করে সেই নির্যাস ছেঁকে নিয়ে এক কাপ পরিমাণ ২৫-৩০দিন পান
করলে খোস পচড়া ও চুলকানি ভালো হয়।
ফোঁড়ার পুঁজ বের করতে
১০-১২টি আপাং পাতা নিয়ে এবং ৫-৬গ্রাম আতপ চাল একসাথে নিয়ে স্বাভাবিক তাপমাত্রার
বিশুদ্ধ পানির সাথে বেটে ফোঁড়ার চারপাশে প্রলেপ দিলে ফোঁড়ার ভিতর থেকে পুঁজ
বেরিয়ে আসে।
প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া আপাং
গাছের সম্পূর্ণ অংশ ভালোভাবে ধুয়ে নিয়ে গুঁড়ো করে নিতে হবে। গুঁড়োর পরিমাণ
৮-১০গ্রাম হতে হবে। এক গ্লাস বিশুদ্ধ পানির সাথে সম্পূর্ণ গুড়ো মিশ্রিত করে
খেতে হবে। এভাবে দিনে ২-৩বার খেতে হবে তাহলে প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া থেকে মুক্তি
পাওয়া যাবে।
গ্রহণী রোগে
৬গ্রাম পরিমাণ আপাং এর মূল বেটে নিয়ে ১গ্লাস ঠাণ্ডা পানিতে মিশিয়ে এবং তার
সাথে ২-৩টি গোল মরিচ বেটে পানিতে মিশিয়ে খেলে গ্রহণীর মতো দূরারোগ্য রোগ ও
ভালো হয়।
লেখকের মন্তব্য
উপরে যেসব রোগ নিরাময়ে আপাং গাছের ব্যবহার সম্পর্কে জানলেন সেসব রোগে আক্রান্ত
হলে উপরের বলা নিয়ম অনুসরণ করতে পারেন। তারপরও যদি আশা অনুরূপ ফলাফল না পেয়ে
থাকেন তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।ধন্যবাদ।।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url